Monday, March 26, 2018

আমরা সবাই শাক্ত

সোশাল মিডিয়ায় বিশিষ্ট কত মানুষের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীর ঝাপসা মিছিলে হঠাৎ এক-একটা মুখ কিরকম ছুঁচের মত বেঁধে চেতনায়, স্মৃতির বিষাদবৃক্ষ থেকে চুইঁয়ে পড়ে কয়েক ফোঁটা ঘন আঠার মত রক্ত । কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু দিবস ছিল ২৩ এ মার্চ । আমার মনে ছিলনা । স্ক্রোল ই-পত্রিকায় তাঁকে নিয়ে একটা ইংরেজি লেখা পড়ে খেয়াল হল ।

আশির দশকের কলকাতায় বড় হবার স্মৃতির সাথে মিশে আছে এই উন্মাদ প্রতিভাধরের শব্দমদিরার নেশা । 

তাঁকে ছোটবেলায় কয়েকবার দেখেছি । আমার ঠাকুরদা মণীশ ঘটক যখন বহরমপুর থেকে কলকাতায় আসতেন, দেখা করে যেতেন । কল্লোল যুগ আর কৃত্তিবাস যুগের নানা উদ্দাম উপকথার আদানপ্রদান হত, কিন্তু তখনো আমার কাছে বই মানে হেমেন রায়, ফেলুদা, টেনিদা, বা টিনটিন আর কবিতা মানে স্কুলে রবীন্দ্রকাব্য বা কখনো নজরুল-সুকান্ত আবৃত্তি, তাই এই আলাপচারিতার মাহাত্ম্য উপলব্ধি করিনি ।

তারপর তন্ময় কৈশোরে বেজে উঠলো রাতের কড়ানাড়া, ভর করলো জীবনানন্দ দাশ আর শক্তি চট্টোপাধ্যায় । আর (বয়সের আনুমানিক ক্রমানুসারে) প্রেমেন মিত্র, সমর সেন, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, নীরেন চক্রবর্তী,  শঙ্খ ঘোষ ।  আরো পরে এলো পাঠ্য হিসেবে নয়, ভালোবেসে পড়া রবীন্দ্রনাথ । প্রবাসী জীবনে নাস্তিকের ঠাকুরঘর হয়ে উঠলো বাংলা বই এর তাক । তাতে এঁদের সাথে যুক্ত হলেন বীরেন চট্টোপাধ্যায়, সুকান্ত ভট্টাচার্য্য, অমিয় চক্রবর্তী, বিষ্ণু দে, বুদ্ধদেব বসু, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, অরুণ সরকার, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, তারাপদ রায়, উৎপলকুমার বসু, নবনীতা দেবসেন, তুষার রায়, জয় গোস্বামী, ভাস্কর চক্রবর্তী .... আরো অনেকে, যার মধ্যে অবশ্যই আমার ঠাকুর্দা মণীশ ঘটক ও পিসতুতো দাদা নবারুণ ভট্টাচার্য্য-ও আছেন। খুঁজে চলেছি কৈশোরে মুগ্ধ করা অনন্য রায়ের বই ।

 

এখন কিছুদিন চলবে শক্তি-আচ্ছন্নতা ।




My translation of Shakti Chattopadhyay's iconic poem ‘অবনী বাড়ি আছো?’

Abani, are you home?

Doors clasped shut, in the still of the night
Someone keeps knocking at the door
‘Abani, are you home?’
It rains here all year long
Clouds graze like cows
Sullen green tube-weeds 
Clasp at the doorway - 
‘Abani, are you home?’
The molten heart aches  
With a distant fading pain
As I doze off  
Suddenly, a knock at the door
‘Abani, are you home?’

Here is the original poem:

অবনী বাড়ি আছো?

দুয়ার এঁটে ঘুমিয়ে আছে পাড়া
কেবল শুনি রাতের কড়ানাড়া
‘অবনী বাড়ি আছো?’
বৃষ্টি পড়ে এখানে বারোমাস
এখানে মেঘ গাভীর মতো চরে
পরাঙ্মুখ সবুজ নালিঘাস
দুয়ার চেপে ধরে–
‘অবনী বাড়ি আছো?’
আধেকলীন হৃদয়ে দূরগামী
ব্যথার মাঝে ঘুমিয়ে পড়ি আমি
সহসা শুনি রাতের কড়ানাড়া
অবনী বাড়ি আছো?